লিংকডইন থেকে ক্লায়েন্ট হান্টিং করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

মার্কেটপ্লেসের বাইরে ক্লায়েন্ট জেনারেট করার জন্য লিংকডইন খুবই ইফেকটিভ। আপনি যে সেক্টরেই ফ্রিল্যান্সিং করেন না কেন, যদি সঠিক প্রসেস ফলো করেন, তাহলে আপনারা এ প্ল্যাটফর্ম থেকেই লং-টার্ম ক্লায়েন্ট জেনারেট করতে সক্ষম হবেন। আজকের আর্টিকেলে আপনাদেরকে জানাবো লিংকডইন থেকে ক্লায়েন্ট হান্টিং করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

লিংকডইন টিপস ০১

লিংকডইন থেকে দ্রুত ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনার প্রোফাইল যেন পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের প্রথমবারেই অ্যাট্রাক্ট করতে পারে তা নিশ্চিত করুন। কিভাবে? প্রোফাইল পিকচারে একদম ফরমাল পিকচার রাখুন। তারপর হেডলাইনে আপনার স্কিল ও এক্সপার্টাইজকে ডিফাইন করে এমন তিনটা ওয়ার্ড ইনক্লুড করুন। সেই সাথে বায়োতে নিজের স্কিল, এক্সপেরিয়েন্স, সার্ভিস দেয়ার জন্য ইন্টারেস্ট সেক্টর, অ্যাচিভমেন্ট ইত্যাদি ইনফরমেশনগুলো ডিটেইলে তুলে ধরুন, যাতে করে এটা পড়লেই আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে সবাই ধারণা পেয়ে যান। এর পাশাপাশি নিজের এডুকেশন, কাজের এক্সপেরিয়েন্স, ট্রেনিং, সার্টিফিকেশন ইত্যাদির ইনফরমেশনগুলো একটা একটা করে অ্যাড করুন। ও হ্যাঁ, লিংকডইন প্রোফাইলে আপডেটেড পোর্টফোলিও ও রেজুমে অ্যাড করতে ভুলবেননা কিন্তু!

লিংকডইন টিপস ০২

লিংকডইনে নিজের নেটওয়ার্ক গ্রো করানোর শুরুটা হওয়া উচিৎ আপনার মতো সেইম নিশে সার্ভিস অফার করছেন এমন পরিচিত মানুষদের সাথে কানেক্টেড হওয়ার মাধ্যমে। তখন নেটওয়ার্ক সাজেশন সেকশন থেকে আপনি আপনার পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের প্রোফাইল খুঁজে বের করে তাদের কানেকশন রিকোয়েস্ট সেন্ড করতে পারবেন। এর পাশাপাশি লিংকডইনের সার্চবারে সার্চ করেও আপনারা যেসব কোম্পানি ও ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করতে চান, তাদের প্রোফাইল খুঁজে পেতে পারবেন। শুধু তাই নয়, নেটওয়ার্ক বাড়াতে নিশ বেইজড বিভিন্ন গ্রুপে জয়েন করাও বেশ হেল্পফুল। এছাড়াও একটু সার্চ করলেই আপনারা ইনফ্লুয়েনশিয়াল অনেক মানুষের প্রোফাইল খুঁজে পাবেন, যাদের পোস্টের রিচ অনেক ভালো। তাদের সাথে কানেক্টেড হতে পারেন। সেই সাথে যারা আপনার প্রোফাইল ভিউ করবে, তাদেরকেও অবশ্যই কানেকশন রিকোয়েস্ট সেন্ড করুন।

লিংকডইন টিপস ০৩

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নিজের কাজের স্যাম্পল শো কেইস করার জন্য একটা ভালো অপশন হতে পারে লিংকডইনের Featured নামক সেকশনটা। এই সেকশনটা প্রোফাইলের একদম ওপরের দিকে থাকায়  যদি আপনার প্রিভিয়াস ওয়ার্ক স্যাম্পলগুলো এখানে আপলোড করেন, তাহলে কোন পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল ভিজিট করার সাথে সাথেই আপনার কাজের কোয়ালিটি সম্পর্কে আইডিয়া পেয়ে যাবেন। এই সেকশনে আপলোডের স্পেসিফিক লিমিট নেই ঠিকই, তবে পরামর্শ থাকবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কন্টেন্ট আপলোড না করার। বরং আপনি যে সার্ভিস গুলো অফার করেন, সেগুলোর প্রতিটার একটা করে স্যাম্পল আপলোড করুন। এছাড়াও এই সেকশনে চাইলে আপনার কোন সার্টিফিকেশন, অ্যাওয়ার্ড বা অ্যাচিভমেন্ট থাকলে সেগুলোও আপলোড করতে পারেন। যদি Featured সেকশনের ফুল অ্যাডভান্টেজ পেতে চান, তাহলে প্রোফাইলের ভিজিবিলিটি অবশ্যই Public  রাখুন।

লিংকডইন টিপস ০৪

বর্তমানে লিংকডইনে অ্যাকটিভ ইউজারের সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় ফ্রিল্যান্সারদের ক্লায়েন্ট হান্টিংয়ের জন্য এটা হতে পারে পারফেক্ট প্লাটফর্ম। লিংকডইনে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের সাথে সহজে কানেক্টেড হওয়ার জন্য Edit Profile এর Experience সেকশনে গিয়ে Freelance বা Self Employed অপশনটা অন করে রাখুন৷ এই অপশনটা অন থাকলে আপনি যে ফ্রিল্যান্স বেসিসে কাজ করেন সেটা সবাই বুঝতে পারবেন। তখন আপনারা নিজেদের স্কিল, এক্সপেরিয়েন্স এবং কোন ধরণের ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করতে চান তা আরো ইফেকটিভলি হাইলাইট করতে পারবেন। সেই সাথে যখন কোনো ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারদের হায়ার করার জন্য সার্চবারে সার্চ করবেন, তখন আপনার প্রোফাইলটা সার্চ রেজাল্টে ভিজিবল হবে।

লিংকডইন টিপস ০৫ 

লিংকডইনে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের সাথে কানেকশন বিল্ড আপ করার জন্য শুধুমাত্র কানেকশন রিকোয়েস্ট সেন্ড করাই এনাফ নয়। বরং তাদেরকে পারসোনালাইজড ইনভাইটেশন সেন্ড করাই সেফ অপশন। পারসোনালাইজড ইনভাইটেশন হচ্ছে যখন কাউকে কানেকশন রিকোয়েস্ট সেন্ড করা হয়, তখন সাথে একটা করে মেসেজ ইনক্লুড করে দেয়া। এই মেসেজটা ক্লায়েন্টের প্রোফাইল ও ইন্ডাস্ট্রি অনুযায়ী পারসোনালাইজ করা হয়। এভাবে যখন মেসেজ পাঠাবেন, তখন যিনি মেসেজটা রিসিভ করবেন তিনি বুঝতে পারবেন আপনার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র তার কাছে সার্ভিস সেল করা নয়, বরং জেনুইনলি আপনি তার সাথে কানেক্টেড হতে ইন্টারেস্টেড। এতে করে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের কাছে পজিটিভ ইমপ্রেশন ক্রিয়েট করতে পারবেন, যা তাদের সাথে কাজ করতে পারার পসিবিলিটি বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।

লিংকডইন টিপস ০৬ 

যদি লিংকডইন থেকে ক্লায়েন্ট খুঁজে পেয়ে তাদের সাথে লং-টার্মে কাজ করতে চান, তাহলে আপনাকে তাদের সাথে বিভিন্নভাবে এনগেইজমেন্ট বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে ছোট্ট একটা টিপস শেয়ার করি। সবাই নিশ্চয়ই জানেন, লিংকডইনে যে কোন টপিকই হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে সার্চ করা যায়। তাই শুরুতে আপনার নিশ রিলেটেড যেকোনো একটা হ্যাশট্যাগ সার্চ বারে লিখুন। তখন আপনি অনেকগুলো পোস্ট দেখতে পাবেন যেগুলো আপনার নিশের সাথে রিলেটেড। এবার আপনার কাজ হলো ওই পোস্টগুলোতে ভ্যালুয়েবল কমেন্ট করা। এই ভ্যালুয়েবল কমেন্ট অন্য একজনের কমেন্টের রিপ্লাই দেয়ার মাধ্যমে যেমন করতে পারেন, তেমনিভাবে সেপারেটলিও করতে পারেন। মোট কথা এমনভাবে কমেন্ট করুন, যাতে করে আপনার ওই কমেন্ট পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের নজরে আসে। এটা করে খুব সহজেই নিজের নেটওয়ার্কিং বাড়াতে পারবেন।

লিংকডইন টিপস ০৭ 

একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি যে নিশেই ক্লায়েন্টদের সার্ভিস প্রোভাইড করুননা কেন, সবসময় ট্রাই করবেন আপনার নিশ বেইজড লিংকডইন গ্রুপগুলোতে জয়েন করার। পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের রিচ করার জন্য এই গ্রুপগুলো খুবই ইফেকটিভ। লিংকডইনের সার্চবারে সার্চ করলেই আপনারা নিজের নিশবেইজড অনেক লোকাল ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ পেয়ে যাবেন। সেই গ্রুপগুলোতে জয়েন হয়ে নিয়মিত হেল্পফুল বিভিন্ন কন্টেন্ট, যেমন: ছোট আর্টিকেল, ব্যানার বা ভিডিও শেয়ার করুন। এছাড়াও কেউ হেল্প চাইলে তাকে হেল্প করা, গ্রুপের বিভিন্ন ডিসকাশনে পারটিসিপেট করা ইত্যাদি ছোট ছোট কাজ গ্রুপে অল্প সময়েই আপনার পরিচিতি বাড়াবে। এর ফলে ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কাজের অফার পাওয়ার চান্সও বাড়বে। আবার গ্রুপে কোনো ক্লায়েন্ট হায়ারিং পোস্ট করার পর তাদেরকে রিচ করলে পজিটিভ আউটপুটও পাওয়া সম্ভব হবে।

লিংকডইন টিপস ০৮ 

একজন ফ্রিল্যান্সার যখন তার লিংকডইন নেটওয়ার্ক গ্রো করানো শুরু করেন, তখন অনেক পটেনশিয়াল ক্লায়েন্ট তার নেটওয়ার্কে কানেক্টেড হতে শুরু করেন। এসময়ে তাদের চোখে নিজের ব্যাপারে পজিটিভ ইম্প্রেশন তৈরি করতে চাইলে প্রোফাইলে রেগুলারলি অ্যাক্টিভ থেকে নিশ রিলেটেড বিভিন্ন কন্টেন্ট ও রিসোর্স শেয়ার করুন। এই কন্টেন্ট হতে পারে আপনার ক্যারিয়ারের কোন গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা কিংবা আপনার অফার করা সার্ভিসের বিভিন্ন টিপস এন্ড ট্রিকস। আবার চাইলে বিভিন্ন হেল্পফুল ইমেজ বা ভিডিও কন্টেন্টও শেয়ার করতে পারেন। তবে যে কন্টেন্টই পোস্ট করুননা কেন, সেটা যেন হাই কোয়ালিটির ও ইউনিক হয় সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখুন৷ এভাবে যত বেশি হেল্পফুল কন্টেন্ট শেয়ার করবেন, তত দ্রুত পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের অ্যাটেনশন পেতে পারবেন।

লিংকডইন টিপস ০৯

লিংকডইনে ক্লায়েন্টদের সাথে ইনবক্সে কনভারসেশন স্টার্ট করার কাজটা একটু ট্রিকি। বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারই টেক্সট করার সময় নিজের সার্ভিস সেল করার ব্যাপারে এত বেশি অ্যাটেনশন দেন যে তখন ক্লায়েন্টদের রিপ্লাই করার ইচ্ছাটাই চলে যায়। তাহলে কী করতে পারেন? যে ক্লায়েন্টকে মেসেজের মাধ্যমে রিচ করছেন তাকে শুরুতেই বোঝানোর ট্রাই করুন যে আপনি তার ব্যাপারে অলরেডি এনাফ রিসার্চ করেছেন। তার কোম্পানির কোনো অ্যাচিভমেন্ট বা তার প্রোফাইলের কোনো পোস্ট যদি আপনার কাছে ভ্যালুয়েবল মনে হয়, তাহলে সেটা নিয়ে কনভারসেশন স্টার্ট করতে পারেন। তারপর রিপ্লাই আসা স্টার্ট হলে আপনি যে আপনার স্কিল এক্সপার্টাইজের মাধ্যমে তাকে বেনিফিট দিতে ক্যাপাবল, সেই বিষয়টা ধীরে ধীরে হাইলাইট করুন। কনভারসেশনের শুরুতেই সার্ভিস সেল করার বৃথা চেষ্টা না করে যদি জেনুইন কনভারসেশনের মাধ্যমে কাজটা করেন, তাহলেই ক্লায়েন্ট জেনারেট করা পসিবল হবে।

লিংকডইন টিপস ১০

অনেক ফ্রিল্যান্সারেরই লিংকডইনের জব সেকশন নিয়ে একটা মিসকনসেপশন রয়েছে, সেটা হলো তারা মনে করেন এই সেকশনে ফ্রিল্যান্স বেসিসে কাজের অফারগুলো পোস্ট করা হয়না। অথচ অনেক ক্লায়েন্ট রয়েছেন, যারা এই জব সেকশনে নিজেদের কোম্পানির জন্য এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সার হায়ার করার জন্য পোস্ট করে থাকেন। তাই এই সেকশনটা মোটেও ইগনোর করা যাবেনা। আপনারা সার্চবার ইউজ করে খুব সহজেই যে ধরণের কাজের সুযোগ খুঁজছেন তা জব সেকশনে অ্যাভেইলেবল রয়েছে কিনা দেখে নিতে পারবেন। তবে এখান থেকে কোনো ফ্রিল্যান্স প্রজেক্টে অ্যাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে প্রজেক্টের ধরণ অনুযায়ী রেজুমে মোডিফাই করে তারপর অ্যাপ্লাই করতে। সেই সাথে কোনো প্রজেক্টে অ্যাপ্লাইয়ের পর যিনি হায়ারিং পোস্ট করেছেন, তাকে নক করে ফলোআপ করতে ভুলবেননা।

লিংকডইন টিপস ১১

লিংকডইনে যেকোনো পোস্টের রিচ বাড়াতে এবং তা টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দিতে কিওয়ার্ড ও হ্যাশট্যাগ খুব পাওয়ারফুল রোল প্লে করে। তাই আপনি যখনই আপনার প্রোফাইলে কোন কন্টেন্ট পোস্ট করবেন, তখন চেষ্টা করবেন পোষ্টের সাথে ফ্রিকুয়েন্টলি সার্চ করা হয় এমন কিছু কিওয়ার্ড ইউজ করতে। এক্ষেত্রে পোস্ট করার আগে একটু কিওয়ার্ড রিসার্চ করে নিতে পারেন। এর পাশাপাশি পোস্টের সাথে মানানসই এমন কয়েকটা হ্যাশট্যাগও ইউজ করুন। যেহেতু ফ্রিল্যান্সাররা তাদের প্রোফাইলে নিজেদের নিশ বেইজড কনটেন্টই পোস্ট করে থাকেন, তাই যদি কিওয়ার্ড ও হ্যাশট্যাগ ইউজ করা হয় তাহলে সেই পোষ্টগুলো আরো দ্রুত পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের কাছে রিচ করতে পারে। এতে নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হওয়ার চান্সও বাড়ে।

লিংকডইন টিপস ১২

আমরা যখন কোন অনলাইন পেইজ কিংবা ওয়েবসাইট থেকে শপিং করি, তখন সেখানকার রিভিউ সেকশনে একবার চোখ বুলিয়ে যেতে ভুলি না। এ ব্যাপারটা ক্লায়েন্টরা যখন ফ্রিল্যান্সারদের হায়ার করেন সেক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। একারণেই আপনি যখন লিংকডইন ব্যবহার করে ক্লায়েন্ট হান্টিং করবেন, তখন সবসময় ট্রাই করবেন নিজের প্রোফাইলে প্রিভিয়াসলি যেসব ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করেছেন, তাদের কয়েকজনের রেকমেন্ডেশন অ্যাড করতে। এই রেকমেন্ডেশন যে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার ক্রেডিবিলিটি কতটা বাড়িয়ে তুলবে, তা আপনার কল্পনারও বাইরে। তাই যখনই কোনো ক্লায়েন্টকে সার্ভিস ডেলিভার করবেন, তখন তাকে আপনার লিংকডইন প্রোফাইলে একটা রেকমেন্ডেশন দিতে রিকোয়েস্ট করুন।

লিংকডইন টিপস ১৩

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য লিংকডইন থেকে ক্লায়েন্ট জেনারেট করার একটা ইফেকটিভ হ্যাক হচ্ছে নিজেদের অ্যাভেইলিবিলিটি জানিয়ে প্রোফাইলে পোস্ট করা। অনেক সময় এমন হতে পারে কোন ক্লায়েন্টের হয়তো আপনার প্রোফাইল ভিজিট করার পর মনে হলো আপনি তাকে সার্ভিস প্রোভাইড করতে ক্যাপাবল। কিন্তু আপনি আদৌ কাজের জন্য অ্যাভেইলেবল রয়েছেন কিনা সেটা বুঝতে না পেরে তিনি আর আপনাকে নক করলেন না। এমন হওয়া মোটেও অস্বাভাবিক নয়। এতে করে কিন্তু আপনি একজন ক্লায়েন্ট হারিয়ে ফেললেন। এমন যেন না হয় সেজন্য কিছুদিন পরপরই আপনি যে ক্লায়েন্টদেরকে সার্ভিস প্রোভাইড করার জন্য অ্যাভেইলেবল রয়েছেন এবং একই সাথে কাদের সাথে কাজ করতে ইন্টারেস্টেড -এ দুটো বিষয় মেনশন করে নিজের প্রোফাইলে পোস্ট করুন। এটা করলে দেখতে পাবেন অনেক ক্লায়েন্টই কাজের জন্য আপনাকে নক করবেন।

লিংকডইন টিপস ১৪

আপনারা কি জানেন? যদি লিংকডইন প্রোফাইলের ইনফরমেশন রেগুলারলি আপডেট না করেন, তাহলে একজন ক্লায়েন্ট আপনাকে কখনোই পুরোপুরি ট্রাস্ট করতে পারবেন না? এই কারণে ফ্রিল্যান্সারদের উচিৎ নিয়মিত তাদের প্রোফাইল আপডেট করা। যেমন ধরুন, স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় আপনি লিংকডইন প্রোফাইল ওপেন করেছিলেন এবং বর্তমানে আপনি একজন গ্র্যাজুয়েট। এই গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশনটা এডুকেশন সেকশনে আপডেট করে দিন৷ তারপর ধরুন, কোন একটা নতুন কোর্স করলেন। তাহলে সেই কোর্সের সার্টিফিকেটটা পোস্ট করুন। সেই সাথে স্কিল সেকশনে গিয়েও নতুন স্কিলটা অ্যাড করে দিন। অথবা কোনো একটা কোম্পানির সাথে কিছুদিন প্রজেক্ট বেসিসে কাজ করলেন। সেটাও এক্সপেরিয়েন্স সেকশনে ইনক্লুড করে নিন। যদি এভাবে প্রোফাইল আপডেট করেন, তাহলে কেউ আপনার প্রোফাইল ভিজিট করতে আসলে বুঝতে পারবেন যে আপনি প্রতিনিয়ত নিজেকে ডেভেলপ করার চেষ্টা করেন। নিজের ব্যাপারে বাকিদের মনে পজিটিভ ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করার এই সুযোগটা মোটেও হাতছাড়া করবেন না।

লিংকডইন টিপস ১৫

লিংকডইন একটা প্রফেশনাল প্ল্যাটফর্ম। তাই এখানে কিছু এটিকেট বা আদবকেতা মেনে চলতে হবে। যেমন: লিংকডইনে কোন ফানি পোস্ট কিংবা কন্ট্রোভার্সিয়াল পোস্ট না করাই বেটার। বরং সবসময় নিজের নিশ বেইজড কন্টেন্ট পোস্ট করুন। একইসাথে ছবি পোস্ট করার ক্ষেত্রেও থাকতে হবে সতর্ক। বিশেষ করে আপনার প্রোফাইল পিকচার ও কভার ফটো যেন ফর্মাল হয় তা নিশ্চিত করুন। এর পাশাপাশি লিংকডইনে কখনোই নিজের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের ছবি শেয়ার করতে যাবেননা। আবার এই প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজন ছাড়া কারো ইনবক্সে শুধুমাত্র হাই/হ্যালো বলতে যাবেননা। যদি প্রয়োজনেও কাউকে নক করেন, সেক্ষেত্রেও বিনয়ীভাবে কথা বলুন। মনে রাখবেন, এটা কিন্তু ফেসবুকের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট নয়। তাই এখানে অবশ্যই নিজের প্রফেশনালিজম মেইনটেইন করুন।

লিংকডইন টিপস ১৬

যদি আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং বিজনেসকে আরেকটু প্রফেশনালি লিংকডইনে প্রমোট করতে চান, তাহলে একটা কোম্পানি পেইজ ক্রিয়েট করতে পারেন। কোম্পানি পেইজ ক্রিয়েট করার জন্য আপনার পার্সোনাল প্রোফাইল থাকা ম্যান্ডেটরি। পার্সোনাল প্রোফাইলের Work আইকনে গিয়ে এই পেইজ ওপেন করতে হয়। সহজ ভাষায় কোম্পানি পেইজ হল অনেকটা ফেইসবুক পেইজের মতো। এই পেইজে ফ্রিল্যান্সিং বিজনেসের মার্কেটিং আরেকটু সিস্টেম্যাটিক ওয়েতে করা পসিবল হয়। এই পেইজে নিজের ফ্রিল্যান্সিং বিজনেসের পোর্টফোলিও, প্রিভিয়াস ক্লায়েন্টদের রিভিউ এবং বিভিন্ন হেল্পফুল কনটেন্ট শেয়ার করা যায়। সেই সাথে নিজের ইন্ডাস্ট্রির অনেক প্রফেশনাল মানুষ ও কোম্পানির সাথে কানেক্টেড হওয়ার স্কোপ ক্রিয়েট হয়।

লিংকডইন টিপস ১৭ 

বলুন তো, লিংকডইনে ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের নেটওয়ার্ক গ্রো করানোর পেছনে এত এফোর্ট দেন কেন? অবশ্যই ক্লায়েন্ট জেনারেট করার জন্য। এক্ষেত্রে যদি আপনি আপনার সাথে কানেক্টেড থাকা মানুষদের সাথে প্রোপারলি ইন্ট্যার‍্যাক্ট না করেন, তাহলে কিন্তু তাদের সাথে কখনোই জেনুইন কানেকশন বিল্ড আপ করতে পারবেন না। এর ফলস্বরূপ যখন আপনি নিজের সার্ভিস নিতে  ইনফ্লুয়েন্স করার জন্য তাদের ইনবক্স করবেন, তখন যতই ট্রাই করুননা কেন, পজিটিভ রেসপন্স আসার চান্সও কম থাকবে। তাহলে নিজের নেটওয়ার্কের সাথে ইন্ট্যার‍্যাকশন বাড়াতে কী করবেন? তাদের পোস্টে নিয়মিত কমেন্ট করুন। চেষ্টা করুন তাদের অ্যাচিভমেন্টে তাদের কংগ্রাচুলেট করতে, তাদের কোনো পোস্ট ভালো লাগলে অ্যাপ্রিশিয়েট করতে কিংবা তারা যদি কোন সাজেশন চেয়ে পোস্ট করেন, সে ক্ষেত্রে নিজের সাধ্যমত সাজেশন দিয়ে তাদের হেল্প কর‍তে।

লিংকডইন টিপস ১৮

ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে লিংকডইন প্রোফাইল একটা ইফেকটিভ মার্কেটিং টুল হিসেবে কাজ করে। লিংকডইনের স্কিল সেকশনটা প্রোপারলি ইউটিলাইজ করতে পারলে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের সামনে খুব সহজেই নিজের স্কিলসেট ও এক্সপার্টাইজ হাইলাইট করতে পারবেন। লিংকডইনের স্কিল সেকশনে আপনারা যেমন নিশ বেইজড টেকনিক্যাল স্কিল অ্যাড করতে পারেন, সেইসাথে কিন্তু সফট স্কিলগুলো অ্যাড করে নিতে পারেন। সেইসাথে পরামর্শ থাকবে নিজের সবচাইতে বেশি এক্সপার্টাইজ থাকা স্কিলগুলো Re-order অপশনের মাধ্যমে শুরুর দিকে রাখতে। তবে হ্যাঁ, লিংকডইনে কখনোই প্রয়োজনের চাইতে অতিরিক্ত স্কিল অ্যাড করার চেষ্টা করবেন না। কারণ এতে করে যারা আপনার প্রোফাইল ভিউ করবেন, তাদের মনে ট্রাস্ট ইস্যু তৈরি হতে পারে। আবার অনেক সময় দেখতে পাবেন, অনেকে নিজে এনডোর্সমেন্ট পাওয়ার জন্য আপনাকে এমন অনেক স্কিলে এনডোর্স করেছে, যেটা আপনার সার্ভিসের সাথে ওভাবে রিলেটেবল নয়, সেক্ষেত্রে সেই এনডোর্সমেন্টগুলো রিমুভ করে দিন।

লিংকডইন টিপস ১৯

লিংকডইনে পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের মেসেজ সেন্ড করে তাদেরকে সার্ভিস নিতে কনভিন্স করার একটা ইফেকটিভ হ্যাক হচ্ছে মেসেজের শেষে কল টু অ্যাকশন রাখা। কল টু অ্যাকশন হচ্ছে আপনি যে একজন মানুষকে জেনুইনলি সার্ভিস দিতে চাইছেন, তার প্রুফ। কল টু অ্যাকশন হিসেবে আপনি আপনার পোর্টফোলিওর লিংক দিতে পারেন, নিজের কন্টাক্ট ডিটেলস দিতে পারেন অথবা সিম্পলি তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন তিনি আপনার সাথে ফারদার ডিসকাশনে ইন্টারেস্টেড কিনা। সব সময় মনে রাখবেন, কল টু অ্যাকশনের মাধ্যমে কনভারসেশন শেষ করলে ক্লায়েন্টদের নিজের কাছ থেকে সার্ভিস নিতে কনভিন্স করাটা তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ হয়ে যায়। শুধুমাত্র মেসেজিংই নয়, বরং তার পাশাপাশি আপনার প্রোফাইলের পোস্টগুলোর শেষেও কল টু অ্যাকশন রাখতে পারেন।

লিংকডইন টিপস ২০

লিংকডইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করার অপরচুনিটি খুঁজে থাকেন। তাই তাদেরকে অ্যাট্রাক্ট করার জন্য নিজের প্রোফাইলে নিয়মিত কনটেন্ট পোস্ট করতে হয় এবং একইসাথে তাদের সাথে ইনবক্সেও কমিউনিকেট করতে হয়। আর এক্ষেত্রে কনটেন্ট বা টেক্সটের ল্যাঙ্গুয়েজ কিন্তু ইংলিশই হয়ে থাকে। অনেকেই রয়েছেন যারা রিটেন ইংলিশে কিছুটা উইক হওয়ায় তাদের কন্টেন্টে স্পেলিং বা গ্রামাটিক্যাল মিসটেক থাকে। এই মিসটেকগুলো একজন পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টের সামনে আপনার ইম্প্রেশন ডাউন করে দিতে পারে। তাই কন্টেন্ট বা টেক্সট লেখার সময় বিভিন্ন রাইটিং টুলের হেল্প নিতে ভুলবেননা। চাইলে গ্রামারলি টুলের গুগল ক্রোম এক্সটেনশনটা অ্যাকটিভেট করে নিতে পারেন। এতে আপনার লেখার মিসটেকগুলো ডিটেক্ট করতে পারবেন। এছাড়াও যদি কন্টেন্টের কোয়ালিটি আরো বাড়াতে চান, সেক্ষেত্রে গ্রামারলির পেইড অ্যাকাউন্ট পারচেস করতে পারেন।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন: